“পতিতা আমাকে ডাক দিয়ে বললো: যাবেন? ভাল সিকিউরিটির ব্যাবস্থাও আছে”

হেডলাইন দেখে যদি কেউ ভাবে এটা একটা চটি বা চটি টাইপ গল্প তাহলে তারা নিরাশ হবেন। তাদের বলছি- এখনি আপনি আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে অন্য কোন ব্লগে যান যেখানে চটি লেখা হয়। এখানে যে লেখাটি লেখা হয়েছে তা আমার দেখা একটি নয় বরং কিছু ঘটনার সমষ্টি থেকে এবং তা থেকেই যে প্রশ্ন উত্থাপিত তা নিয়ে।

আমি ও আমার রুমম্যাট কদিন আগে একটা জরুরী কাজে একটু দূরে যেতে হয়েছিল। একেবারে চট্টগ্রামের এমাথা থেকে ওমাথা। দুপুরে যখন শহরের মাঝে অবস্থান করছিলাম তখন আমার বন্ধু সোহাগ ও আমি বাসের জন্যে ফুটপাত দিয়ে হেটে চলছিলাম সামনের দিকে। এমন সময় একটা মেয়ে আমাকে ডেকে বললো- “যাবেন? ভাল সিকিউরিটির ব্যাবস্থাসহ আছে…”
ব্যাস্ত রাস্তায় হাটছিলাম বলে প্রথমে বুঝতে পারি নি কি বললো..! কিছুক্ষণ বাদে বুঝতে পেরেই কিছুটা তাড়াহুড়ো করে বলে উঠলাম-” না, লাগবে না”
আমার বন্ধু সোহাগ ব্যাপারটি বুঝতে পেরে আমাকে নিয়ে রাস্তা পেরিয়ে অন্য প্রান্তে চলে আসলো সেই ফুটপাত দিয়ে না হেটে আর সে বললো- “দেখসত? কি অবস্থা? এখন দিনে দুপুরেও এরা…….. ”
কিছু বলতে গিয়েও চুপ হয়ে গেলাম। বাস এসে পড়েছে। বেশ চিন্তিত অবস্থায় বাসে চেপে বসলাম। আমাকে চিন্তা করতে দেখে সোহাগ জিজ্ঞেস করলো- “কি চিন্তা করছিস? ”
আমি বলতে নিচ্ছিলাম “কিছু না” কিন্তু মনের কথাগুলো আর চেপে না রাখতে পেরে বলা শুরু করলাম। তাকে বললাম- “দেখ সোহাগ একটা জিনিস, এই পতিতারা কিন্তু শখের বসে তাদের এই জীবন চলার পথ বেছে নেয় না। তারা প্রথমত ব্ল্যাকমেইল থেকে শুরু করে দালালদের দ্বারা এমন পরিস্থিতিতে পরে এবং পরে বাধ্য হয় এই পেশায় জড়িত হতে।”
সোহাগ বললো-“ধরলাম নাহয় একবার দুবার তারা ব্ল্যাকমেইলের স্বীকার হয়েছে কিন্তু তারা কি পারে না অন্য কোন পেশায় পরে যুক্ত হতে?”
আমি বললাম- “তারা দালালের হাতে বন্দি এখন, বিভিন্ন উপায়ে ব্ল্যাকমেইলের স্বীকার”
পরে সোহাগ বললো – “হ্যা এমন কিছু ডকুমেন্টারি দেখেছি”

কথা বলা শেষ করার পর চুপ করে জানালা দিয়ে তাকিয়ে ছিলাম। বাস একটা রাস্তার মোড় নিতে জানালা দিয়ে আর বাইরে তাকিয়ে থাকতে পারলাম না। তীব্র রোদ এসে চোখে মুখে পড়লো আর এই তীব্র রোদ দেখেই মনে পরলো দুপুর হয়েছে এবং আমাদের কোন হোটেলে বসে খেয়ে নেয়া উচিৎ। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি তিনটা বাজে। সোহাগ বললো-“চল বাস থেকে নেমে কোন একটা হোটেলে বসি।”
এমন সময় আমি আবার বলতে শুরু করলাম- “একটা জিনিস লক্ষ্য করসত? এখন দুপুর? সেহেতু সেই পতিতা এখন খদ্দের পেলে কিছু টাকা পেত আর তা দিয়ে হয়তো দুপুরে ভাতের জোগাড় হতো”
সোহাগ আমার কাধে হাত রেখে বললো- “দোস্ত সমাজে এমন অনেক কিছুই আছে যার সমাধান আমাদের হাতে নেই”

আমি তখন আসলাম আমার আসল কথায়-
“দোস্ত এই পতিতা তো টাকার জন্যে আজ এখানে কিন্তু কিছু মানুষ যে আজ কাপড় খুলে সেলফি তুলে আরেকজন কে পাঠাচ্ছে আর ভাব বিনিময় করছে? তাদের কি বলবো? তারা তো এটা কে শখ হিসেবে নিয়েছে, নিয়েছে নেশা হিসেবে।এখন নাকি প্রেম মানেই সেক্স চ্যাট, ফোন সেক্স, ন্যুড ফটো আদান প্রদান আর খুব ভাল সম্পর্ক মানে লিটন ভায়ের ফ্ল্যাট…
এদের কি বলবো?”

সোহাগ আমার কাধে আবারো হাত রেখে বললো আজকের বিকেলটায় নাহয় এইসব কথা বাদ দে। সে জানে যে আমার মাথায় আসলে তখন কি ঘুরপাক খাচ্ছিল… কেননা গত বিশ দিনে আমি সাক্ষী হয়েছি এমন কিছু ঘটনার।
স্যার ছাত্রীর সেক্স চ্যাট,
আঙ্কেল ভাতিজীর ফোন সেক্স,
যাদের ভাল ভাবতাম তাদের ন্যুড ফটোগ্রাফি…
ইত্যাদি….
কম হলেও এমন পাচটা ঘটনা। যখন তাদের জিজ্ঞেস করতে গিয়েছিলাম যে কেন এমনটা তারা করছে তখন তারা বলেছিল- যুগ পাল্টেছে, প্রেম মানেই এসব। আর এগুলো তাদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার। মজার ব্যাপার হলো এর মধ্যে কজন হেসেই বলে বসেছিল আমি নাকি ছোট, আমি অনেক কিছুই বুঝি না..!
তখন বলতে ইচ্ছে করেছিল- কি বুঝি না আমি? আমি তো ক্রোমোজোম এর হিসাবও জানি। তাই বলে কি বিয়ের আগেই এগুলো করে এখন আমার জানান দিতে হবে আমি বড় হয়েছি?
উত্তরে একজন বলেছিল- আমি নাকি বেশি বুঝি…
আদৌতেই বা আমি কি বেশি বুঝি?
বুঝলে তো ভাল। অবুঝের মতো তো এমন কাজ করি না যা মেমোরিতে সেভ থাকতে পারে আর যা দ্বারা আমি ব্ল্যাকমেইলের স্বীকার হতে পারি এবং শেষে আত্মহনন…. সম্প্রতি আমরা সকলেই এমন সব ঘটনার ফলে সৃষ্ট আত্মহত্যার ঘটনা নেহাতই কম দেখছি না।

লেখাটা নোংরা লাগলে আমি দুঃখিত। আবার অনেক মুরুব্বি আছেন যারা আমার পরিচিত তারাও এমন লেখা দেখে রাগ করতে পারেন। কিন্তু কি আর করা বলুন? নোংরা যে হয়ে যাচ্ছে চারপাশ…!
আর হ্যা, মুরুব্বিয়ানা কথা বলার আগে শিওর হয়ে নিবেন যে আপনার ছেলে মেয়ে মোবাইল নিয়ে বাথরুমে যাচ্ছে না তো?

আমি যখন ফেইসবুকে আমার এই লেখাটি দিয়েছিলাম তখন অনেকেই ভেবেছিল যে এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট একটি ঘটনার উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে কাউকে বা কিছু মানুষকে উদ্দেশ্য করে। কিন্তু আসলে তা নয়। তবুও সে মানুষগুলো আমার প্রশ্ন দ্বারা এমনভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল কেন তা আশাকরি খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন। এমনভাবে কেউ যদি এই লেখা পড়ে থমকে পড়েন তাহলে আপনার বুঝে নিতে হবে আপনি স্ত্রী লিঙ্গের হলে “একজন শখের বসের পতিতা” আর পুরুষ হলে আপনি তাদের “দালাল” যেমনটা পতিতালয়ে থাকে।
-ধন্যবাদ সবাইকে


আমার ব্লগের ফেইসবুক পেইজ ছেঁড়া ডায়েরী – ব্লগ
চাইলে এই পেইজের মাধম্যে আমার ব্লগের সাথে থাকতে পারেন।

About Sajidur Rahman Shajib

ভালবাসি পড়তে ও চেষ্টা করি লিখতে। লিখতে মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় বলে মানুষের গল্প শুনি, মানুষের সাথে কথা বলি, আড্ডা দেই... এভাবেই কিছু শিখি, সেভাবেই লিখি। এখানে আমার নিজের কৃতিত্ব নেই। সব আপনাদের,মানে আপনারা যারা কিনা আমার সাথে আড্ডা দেন তাদের...
This entry was posted in আমার কিছু ফেইসবুক পোস্ট and tagged , , , , , , , , , , . Bookmark the permalink.

2 Responses to “পতিতা আমাকে ডাক দিয়ে বললো: যাবেন? ভাল সিকিউরিটির ব্যাবস্থাও আছে”

  1. Saiyadsajive বলেছেন:

    Ha vi. Kharaber majhe lukiye thake obisasso sotti ghotona… Kew nijer jibon biliye dry sokun ER kache……. Kew abar sei sokunr kach theke mangso ney

    Liked by 1 person

মন্তব্য করুন...